অনলাইন ডেস্ক:
মাদক ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছিলেন মহিউদ্দিন সরকার নাঈম। কুমিল্লার বুড়িচংয়ের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রাজুর বিরুদ্ধে ফেসবুকে পরপর তিনটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকায় বেশকিছু মাদকের চালান ধরিয়ে দিতে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাহায্য করেছিলেন। এসব কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বুড়িচং উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল এলাকা সংলগ্ন হায়দ্রাবাদনগর গ্রামে তাকে হত্যা করা হয়।
মহিউদ্দিন জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ সরকারের ছেলে। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় হলেও তারা সপরিবারে কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বসবাস করতেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বুড়িচং এলাকায় হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হলেও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে বেশ তৎপর ছিলেন মহিউদ্দিন। তিনি পুলিশ, র্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের ইনফরমার হিসেবে কাজ করতেন। মাদকের চোরাচালান ধরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি ভালো অবদান রাখেন।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন। সীমান্তে শুরু করে কড়া নজরদারি। গেল কয়েক মাসে ওই উপজেলায় মাদকের বেশকিছু বড় চালান ধরা পড়ে। ওসব অভিযানে মহিউদ্দিন অংশগ্রহণ করতেন। তাছাড়াও ওসব অভিযানের অন্যতম সোর্স ছিলেন তিনি। মহিউদ্দিন একসময় সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের মাদক সংশ্লিষ্ট তথ্য দিয়ে সাহায্য করতেন। মাদক ব্যবসায়ী রাজুর সঙ্গে কয়েকদিন আগেও বুড়িচং এলাকায় মহিউদ্দিনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মাদক ব্যবসায়ী রাজুর বাড়ি বাংলাদেশে হলেও ভারতে তার বহু আত্মীয়স্বজন রয়েছে। ভারতের চোরাকারবারিরাও সীমান্তে মাদক, চোরাচালান ও অস্ত্র চালানের বিষয়ে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছিল। সবমিলিয়ে মহিউদ্দিন দুই দেশের সীমান্ত সন্ত্রাসীদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠেন। আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠা ও উপজেলা প্রশাসনের মাদকবিরোধী কড়া অবস্থানের কারণে পাল্টা চ্যালেঞ্জ হিসেবে মহিউদ্দিনকে হত্যা করা হতে পারে।
Leave a Reply